মমতার আরএসএস মন্তব্য: হুমায়ুনের তীব্র পাল্টা আক্রমণ
মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক মঞ্চে এক তীব্র বিতর্কের জন্ম হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করেছেন।
এসআইআর নিয়ে মমতার আশ্বাস
মুর্শিদাবাদের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ঘোষণা করেন যে পশ্চিমবঙ্গে কখনও এনআরসি বা ডিটেনশন ক্যাম্প চালু হতে দেবেন না। তিনি বলেন, "গলা কেটে নিলেও বাংলায় এনআরসি হবে না, কাউকে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন যে বিজেপি এসআইআরকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করছে। তিনি দাবি করেন, এসআইআর-এর কারণে রাজ্যে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে অর্ধেকই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।
সোনালি খাতুনের প্রসঙ্গ
মুখ্যমন্ত্রী সোনালি খাতুনের ঘটনাটি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। গর্ভবতী সোনালিকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হলে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায় এবং তাকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ পায়।
হুমায়ুনের তীব্র প্রতিক্রিয়া
সাসপেন্ড হওয়ার পর হুমায়ুন কবির মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, "নিউটাউন-রাজারহাটে ১১০০ কোটি টাকার জমি মুখ্যমন্ত্রী মন্দির তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছেন। এরকম আরএসএস মার্কা মুখ্যমন্ত্রীর থেকে বরং সরাসরি বিজেপির কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলে স্বাগত জানাব।"
তিনি অভিযোগ করেন যে রাজ্যে মুসলমানদের মসজিদ নির্মাণে বাধা দেওয়া হচ্ছে, অথচ সরকারি অর্থে একের পর এক মন্দির তৈরি হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদের বহুত্ববাদী ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, "মুর্শিদাবাদের মানুষ কখনও দাঙ্গার রাজনীতি মেনে নেবে না। এই জেলা নবাবদের ভূমি। এখানে সকল ধর্মের পবিত্র স্থান রয়েছে।"
তিনি সিরাজউদ্দৌলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে এই অঞ্চলের প্রতিটি ঘরেই তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
রাজনৈতিক সংকট গভীর হচ্ছে
হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন যে তিনি শীঘ্রই দল থেকে পদত্যাগ করবেন এবং ২২ ডিসেম্বর নিজের নতুন দল ঘোষণা করবেন। তিনি বলেন, "মুর্শিদাবাদের মানুষ এর জবাব দেবে। আমি বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ব।"
এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং আগামী দিনে এর প্রভাব কতটা গভীর হবে তা দেখার বিষয়।